মোট ভোটার ৪৮৭২৪
পুরুষ ভোটার ২৫৮৯৯ জন, মহিলা ভোটার ২২৮২৫জন।
মনসুর মহসিন, চকরিয়া, কক্সবাজার।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব ঊর্ধ্বগতির কারণে সারাদেশে দুইদফা নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে আসায় নির্বাচন কমিশনের নতুন ঘোষনা অনুযায়ী
বহু প্রতিক্ষিত ও প্রত্যাশিত কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন রাত পোহালেই ভোট গ্রহন শুরু হবে। প্রথমবারের মতো চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনের ভোট গ্রহন হবে ইভিএমের মাধ্যমে।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ভোটারেরা আগামীকাল সোমবার সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভোট প্রয়োগ করবেন প্রচন্দনীয় প্রার্থীদের। গতকাল শনিবার পর্যন্ত ছিল নির্বাচনের প্রচার প্রচারণার শেষ দিন। প্রচারণার শেষদিনে প্রার্থীদের প্রচারণায় উৎসব মুখর হয়ে উঠেছিল পৌর এলাকার পাড়া-মহল্লা ও বিভিন্ন অলিগলি। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত নির্ঘুম প্রচারণা চালিয়েছে চার মেয়র প্রার্থী, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা। নির্বাচনে অংশে নেয়া প্রার্থীরা ছাড়াও পৌর এলাকায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা,অলিগলিতে, দোকান পাঠে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থীদের নিকটতম আত্বীয়, সমর্থক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। শেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় সাধারণ ভোটারদের মাঝেও নির্বাচনের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনাসহ সবই শেষ হয়েছে গতকাল শনিবার। এবার ভোট যুদ্ধের অপেক্ষার পালা। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে। টানা কয়েক দিনের প্রচার-প্রচারণা, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, ছোট-খাট বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে শেষ হল প্রচারণার কাজ। পৌর এলাকায় নির্বাচনী কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে দেখা গেছে নির্বাচনী পরিবেশ। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের যাবতীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। কাল সোমবার সারাদেশে নয়টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। তৎমধ্যে জেলায় দুটি পৌর নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। নির্বাচন গুলোা হচ্ছে চকরিয়া পৌরসভা ও মহেশখালী পৌরসভা। চকরিয়া পৌরসভায় ভোটার রয়েছে ৪৮৭২৪জন, এরই মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২৫৮৯৯ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছে ২২৮২৫জন। নির্বাচনে ভোটারেরা কাল পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের দুটি করে ১৮টি ভোট কেন্দ্রের ১৩৯টি বুথে ভোট গ্রহণ হবে। এ নির্বাচনে চুড়ান্ত ভাবে ৬৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধি চারপ্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী (নৌকা), নাগরিক কমিটি মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর জিয়াবুল হক (নারিকেল গাছ), জাতীয় পাটি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পাটির কেন্দ্রীয় নেতা মনোয়ার আলম (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট ফয়সাল সিদ্দিকী (কম্পিউটার)। তিনটি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১৪ জন এবং নয়টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৯ জনসহ সর্বমোট ৬৭ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছে।
এদিকে, চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে প্রথম বারের মতো ইভিএমের পদ্বতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তাই ইভিএম পদ্ধতিতে কি ভাবে ভোট প্রদান করতে হয় তা ১৮টি কেন্দ্রে স্বহস্তে ভোটারদের মগভোটিং কার্যক্রম শিখিয়ে দেয়া হয়।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন,চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের দুইটি করে ১৮টি কেন্দ্রের ১৩৯টি বুথে ভোট গ্রহণ হবে।নির্বাচনের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
চকরিয়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ট ও শান্তিপূর্ণ করতে সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) মধ্য রাত থেকে নির্বাচনের সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা নিয়মানুযায়ী শেষ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার ভোট গ্রহণের দিন একজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে, চার প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশের ৬টি মোবাইল ফোর্স ও দুটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, অতিরিক্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স পুরো পৌরসভায় টহল ব্যবস্থা জোরদার করবে। একইসাথে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ৩ জন পুলিশ, ৯ জন আনসার সদস্য (৩ জন নারী আনসারসহ) নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করবে। তবে অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিবরচ্ছিন্নভাবে বাড়তি ফোর্স দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, গত শুক্রবার নৌকা প্রতীকের পথ সভায় উপস্থিত হয়ে কম্পিউটার প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ফয়সাল ছিদ্দিকী নৌকায় সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন।##