গল্পের শুরু টা গোপালগঞ্জের মধুমতী নদী বিধৌত টুঙ্গী পাড়া গ্রামে।একজন সাধারণ নারীর অসাধারণ হয়ে উঠার কাহিনীর সুত্রপাত। কখনো কখনো কিছু মানুষের জীবন , গল্পের কাহিনী ছাপিয়ে ইতিহাসের বাঁকে কিংবদন্তি মানুষের কাতারে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।নেলসন ম্যান্ডেলা ,আব্রাহাম লিংকন, মহাত্মা গান্ধী,ইন্দিরা গান্ধী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অন্যতম। যিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি।তিনি বঙ্গবন্ধু মুজিব এবং ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ঘরে 1947 সাথে 28 সেপ্টেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনার বড় পরিচয় তিনি একজন রাজনীতিবিদ।যার স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক পরিসরে ও সমাদৃত। বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন পুরস্কারে অনন্য সন্মানে সন্মানিত তিনি। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে যার অক্লান্ত পরিশ্রম। 2041 সালে বাংলাদেশ কে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবেশী দেশ সহ উন্নত দেশের রাষ্ট্র নায়কদের কাছে তিনি অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় রাষ্ট্র নায়ক । অন্যদিকে শিল্প সাহিত্যে ও তাঁর একনিষ্ঠ ভালবাসা। তিনি একজন নিরলস পাঠক এবং লেখক ।অনেক বই লিখে তার লেখক সত্তার পরিচয় ইতিমধ্যেই আমরা জানতে পাই।তার লেখনীতে আছে চিন্তার গভীরতা।আছে শক্তিমান লেখকদের মত যে কোন বিষয় সহজ ভাবে কলমের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা শেখ হাসিনার অপরিসীম ক্ষমতা। নিজের চিন্তা চেতনার রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন তার লেখনীর মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের হাতে পৌঁছাতে রাষ্ট্র পরিচালনার ফাঁকে লিখে যাচ্ছেন নিয়মিত। তিনি মনে করেন রবি ঠাকুরের ভাষায়, “বই হল অতীত ও বর্তমানের মধ্যে দেয়া সাকোঁ”।এবং ভিক্টর হুগোর মতে , বই বিশ্বাসের অঙ্গ, বই মানব সমাজকে টিকাইয়া রাখিবার জন্য জ্ঞান দান করে অতএব বই হইতেছে সভ্যতার রক্ষা কবচ”।তাই তার জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতেই কক্সবাজারের বই মেলা। শেখ হাসিনার নিজের লেখা বই নিয়ে বই মেলা।
ধানমন্ডির 32 নম্বর বাসাটা ছিল যেন সাইনবোর্ড বিহীন পাঠশালা, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন পাঠক। বেগম মুজিবের ও পাঠাভ্যাস ছিল প্রবল এবং নানান লেখকের লেখা বইয়ের ভক্ত ছিলেন। জেলখানায় বন্দী অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় ফরমায়েশ ছিল বই পাঠানোর ।তাই বেগম মুজিব সব সময় বিভিন্ন ধরনের বই ক্রয় করে কারাগারে পাঠাতেন । শেখ হাসিনা ও বই পড়ার অভ্যাস পারিবারিক ভাবে পেয়েছেন।তাই তিনি সব সময় নেতাকর্মীদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তিনি বলে থাকেন, “ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন, আমি মনে করি একটি বই হাতে নিয়ে, বইয়ের পাতা উল্টিয়ে পড়া,এর আনন্দটাই আলাদা “।তাই পাঠক এবং লেখক শেখ হাসিনার চিত্র তুলে ধরার জন্য তার জন্মদিনে তার নিজের লেখা বই নিয়ে মেলার আয়োজনের সাহসী পদক্ষেপ নেন সাগর পাড়ের পরিচিত মুখ কবি মানিক বৈরাগী।
কবি,লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক মানিক বৈরাগী । ১৯৯১ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কতৃক রগকাটার স্বীকার, বি এন পি- জামাত জোট সরকার কর্তৃক বারবার রিমান্ড ও কারা নির্যাতনের স্বীকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।যার নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন নিয়ে ওয়ার্কিং স্টিকের উপর ভর করে চলাফেরা করছেন আজ অবধি ।তবুও বঙ্গবন্ধু আদর্শের শুদ্ধ ও সুস্থ রাজনীতির চর্চা থেকে পিছপা হয় নাই ।তিনি নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারেন যে মেধাবী রাজনৈতিক কর্মীরাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ভবিষ্যৎ কান্ডারী। আর সে জন্য চাই রাজনৈতিক মেধা ও মননের বিকাশ।সুন্দর নীতি নৈতিকতা। তার জন্য দরকার বইয়ের পাঠ। তাই মানিক বৈরাগী নিজস্ব উদ্যোগে আয়োজন করতে যাচ্ছেন বইমেলা।গত বছর ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে দুই দিন ব্যাপী বইমেলার আয়োজন করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় এবছরে ও শেখ হাসিনার লেখা বই নিয়ে তার জন্মদিন উপলক্ষে 28 ও 29 সেপ্টেম্বর 2021 দুই দিন ব্যাপী একক বইমেলা আয়োজন করছেন।
যতদূর জানা যায় শেখ হাসিনার লেখা বই নিয়ে একক বই মেলা বাংলাদেশের মধ্যে কক্সবাজারেই প্রথম।যা গত বছর থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। গতিশীল উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিবিদের কাছে বিস্ময়। যার অনস্বীকার্য গৌরবের দাবিদার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আর এই ধারাবাহিক অব্যাহত উন্নয়নের ম্যাজিক জানতে হলে জানতে হবে শেখ হাসিনাকে এবং তার কর্মসূচি। আর তার জন্য আবশ্যক তার লেখা বই পড়া।উক্ত বই মেলায় শেখ হাসিনা লিখিত সব বই পাওয়া যাবে।পাশাপাশি অনেক সনামধন্য লেখকদের রাজনৈতিক বই ও থাকবে। রাজনৈতিক চিন্তা চেতনাকে মর্যাদা ও বীরোচিত করে গড়ে তোলার জন্য এবং নিজেকে জানার জন্য বই পড়ার বিকল্প নাই।মার্ক টোয়েইনের মতে “বই পড়ার অভ্যাস নাই আর পড়তে জানে না এমন লোকের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই”।
মুজিব জন্মশতবর্য কে সরকার “মুজিব বর্ষ” ঘোষণা করেছে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এ উপলক্ষে “মুজিব বর্ষের “অঙ্গিকার ঘরে ঘরে পাঠাগার” কর্মসূচির আলোকে গ্রাম সহ সব জায়গায় পাঠাগার গড়ে তোলার জন্য উদ্ভুদ্ধ করছে এবং পাঠাগারে বই পৌঁছাতে চায়। আবার “পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই,সোনার মানুষ হই” শ্লোগান ধারণ করে একটি ধারাবাহিক পাঠ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সব মিলিয়ে মেধাভিত্তিক সমাজ বিনির্মানে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর।সাধুবাদ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। সে ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার জন্মদিন ঘিরে শেখ হাসিনার লেখা বই নিয়ে কক্সবাজারের বই মেলা অন্যন্য ব্যতিক্রমী প্রয়াস। যার সাথে আয়োজক কবি মানিক বৈরাগী মেধা সম্পন্ন রাজনৈতিক কর্মী তৈরির জন্য এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ কে অনেক কিছু দিয়েছে। তবে আদর্শহীন ও মেধাবী নেতৃত্বের অপ্রতুলতার কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।প্রচার প্রসার হচ্ছে না। রাজনীতি অর্থনীতি সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সহ বিভিন্ন অঙ্গনে উন্নয়নে শেখ হাসিনার অবদান অনস্বীকার্য।যা দেশের পরিধি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে ও সমাদৃত।তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতা এবং দর্শন নিয়ে কিছুদিন আগে মিশরীয় সাংবাদিক এবং লেখক আল আরিশি’ আরবি ভাষায় একটি বই রচনা করে ।যার নাম “শেখ হাসিনা, যে রুপকথা শুধু রুপকথা নয়”। বাংলা একাডেমি কতৃক বইটির বাংলা ভাষার অনুবাদ ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ২৮ ও ২৯ তারিখ কক্সবাজার পাবলিক হলের বইমেলার সফলতা কামনা করি। প্রতি টি নেতা কর্মী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বই, শেখ হাসিনার লেখা বই সংগ্রহ করার আহ্বান করছি।আর নেতা কর্মীদের বই পড়ার উদ্ভুদ্ধ করার জন্য প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজন সহ কার্যালয় ভিত্তিক পাঠাগারের দাবি জেলা, উপজেলা সহ ইউনিয়ন ভিত্তিক সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের প্রতি। দেখা যাচ্ছে যে, দলের আদর্শ উদ্দেশ্য নিয়ে অনভিজ্ঞতার কারণে তর্ক নির্ভর রাজনীতি সমস্যার তৈরি হয়। কর্মীরা হতাশ হয়ে যায়। যার প্রভাব রাজনীতির সুন্দর পথটা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। তাই রাজনৈতিক পাঠ কর্মীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শেখ হাসিনার জন্মদিনে বইমেলার আয়োজন ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এবারের মেলায় লেখক,, গবেষক, দার্শনিক শেখ হাসিনার লেখা বইয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বইও পাওয়া যাবে। একি সাথে স্থানীয় কবি লেখকের বইয়ের সমাহার ঘটবে।
শুভ জন্ম দিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।বাংলাদেশ আপনার কাছে কৃতজ্ঞ এবং চিরকাল স্মরণ করবে। আশাবাদী আমি টুঙ্গীপাড়ার মেঠো পথ বেয়ে বেড়ে উঠা শেখ হাসিনা নামক গল্পটা চিরঞ্জীব বাংলাদেশের সাথে সাহস যোগাবে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
——————————-
লেখক –বদরুল ইসলাম বাদল
কলামিস্ট ও নব্বই দশকের সাবেক ছাত্র নেতা
E-mail badrulislam2027@gmail.com